স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ভবিষ্যতে একক প্রার্থী থাকলেও বিনা ভোটে জয়ী হওয়ার সুযোগ থাকবে না। এ ক্ষেত্রে ‘না ভোট’ প্রবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার কুমিল্লার কোটবাড়ীতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, একক প্রার্থী থাকলেও নির্বাচনে ভোটগ্রহণ বাধ্যতামূলক হবে। অন্য কোনো প্রার্থী না থাকলে, ‘না ভোট’ একটি প্রতিযোগিতামূলক ভূমিকায় থাকবে। প্রার্থীকে বিজয়ী হতে হলে ‘না ভোট’ এর চেয়ে বেশি ভোট পেতে হবে।
সেমিনারে পোস্টাল ভোট ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়ানোর পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে পোস্টাল ভোট আইনগতভাবে চালু থাকলেও এখনো কার্যকর হয়নি। আমরা এটি শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিচ্ছি। ভোটাররা অনলাইনে এবং উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে পোস্টাল ভোটের আবেদন করতে পারবেন।”
প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, “রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ নেই। আমরা তাদের ভোটের আওতায় আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি বৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, সাংবাদিক এবং ভোট গ্রহণে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ভোটাধিকারের বিষয়েও কাজ করছি।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না রাখার বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রসঙ্গেও তিনি কথা বলেন। এ ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক না থাকলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে বলে তার অভিমত।
ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী প্রত্যেক নাগরিকই ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হবেন। তবে মৃত্যুর পর তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের সুযোগ আরও সহজ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সেমিনারে বার্ডের মহাপরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মাসুদা কামাল এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য মাসুদা খাতুন শেফালী।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ছামছুল আলম, বার্ডের কর্মকর্তা, সাবেক জনপ্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মী এবং গণমাধ্যমকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন।