যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শুক্রবার (১ নভেম্বর) একটি ফেসবুক পোস্টে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, "স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো সাময়িকভাবে বিজয়ী হতে পারে। তবে তারা দ্রুতই বুঝতে পারবে যে তাদের বক্তব্যের কোনো সারবত্তা নেই। সামাজিক মাধ্যমে টাকা ঢেলে কিংবা নিউইয়র্কের গণপরিবহনব্যবস্থায় ব্যানার টানিয়ে কোনো লাভ হবে না।"
শফিকুল আলম তার ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনাবলী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে, সে বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কী ভাবছেন, তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি শিগগিরই মুক্ত বিশ্বের নেতা হতে পারেন। তবে আমাদের কাজ হচ্ছে স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং যথাসম্ভব খোলামেলাভাবে সত্যটা তুলে ধরা।”
প্রেস সচিব সরাসরি ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে কোনো সমালোচনা না করলেও বাংলাদেশের অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজের কাজের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, "নেত্র নিউজ একটি দারুণ সাংবাদিকতা করেছে এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে পরিচালিত কিছু মিথ্যা প্রচারণা উন্মোচিত করেছে।"
ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম দাবি করেন, কিছু ঘটনাকে ঘিরে মিথ্যা বয়ান প্রচার করা হয়েছে এবং বিশেষভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে টার্গেট করে এই প্রচারণা চালানো হয়েছে। তবে তিনি স্বীকার করেন যে কিছু ধর্মীয় সহিংসতা ঘটেছে, কিন্তু সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং সেগুলো নিয়ে অতি রঞ্জন করা হয়েছে।
প্রেস সচিব তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিভিন্ন সংকট সামলাতে যে বিচক্ষণতা ও ধৈর্য প্রদর্শন করেছেন, তা প্রশংসনীয়। আগস্টে পুলিশ না থাকলেও ইউনূস অত্যন্ত শান্ত ও আত্মবিশ্বাসী ছিলেন এবং দ্রুত পুলিশ বাহিনীকে ফেরানোর নির্দেশ দেন। শফিকুল আলম লেখেন, "অধ্যাপক ইউনূস আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে বাংলাদেশের সমাজের মানুষের নাগরিক বোধ, শিষ্টাচার, মানবিকতা ও সবাই মিলে একসঙ্গে চলার মানসিকতাই বাকি সবকিছু ঠিক করে দেবে।"
এ মন্তব্যের মাধ্যমে শফিকুল আলম বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা নিয়ে প্রচারিত বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রতিবাদ করেন এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।