স্বাধীন ডেস্ক :
গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার অবশ্যই জনগণের সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল শনিবার বিকেলে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।এসময় তারেক রহমান বলেন তাই জনগণ এ সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে, রাখবে। এ সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এর কিছু আলামত আমাদের সামনে ইতিমধ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এসময় তারেক রহমান আরো বলেন, ‘এই দেশের কোটি কোটি মানুষ চেয়েছিল দেশটি স্বৈরাচারমুক্ত হোক। কিছুদিন আগেও মানুষের কথা বলার অধিকার ছিল না। এই দেশের মানুষ আত্মত্যাগ করে সেই অধিকার অল্প সময়ের মধ্যেই অর্জন করেছে। তবে, আমরা আংশিক সফল হয়েছি। যে পর্যন্ত ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হবে সে পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
সিরাজগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি আশপাশে তাকাই তাহলে দেখতে পাই বেলকুচি, চৌহালীর কামারখন্দের নাম এলেই তাঁতশিল্পের কথা আসে। বিএনপি ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি, তাঁতশিল্প, পাটশিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। বিএনপির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের মানুষের ভোটে ক্ষমতায় এলে বিএনপি তাঁতশিল্পের পাশে এসে দাঁড়াবে। এই শিল্প কীভাবে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যায় সে বিষয়ে গুরুত্ব দেব।’এর আগে স্মরণসভা চলাকালে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য দেওয়ার সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে সভাটি ১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে। বৃষ্টির কারণে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গত ১৫ বছর ধরে গুম করেছে, একের পর এক গুম-খুনের মধ্য দিয়ে রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়েছে। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে নিহত ও আহতদের স্মরণ করছি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তরুণদের একটা বড় ভূমিকা আছে। এই ভূমিকায় আছেন তারেক রহমানও। গণআন্দোলনের জনরোষ থেকে বাঁচতে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা।
স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে (ভার্চুয়ালি) বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভানেত্রী রোমানা মাহমুদ।
ছাত্র-জনতার সরকার পতন আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে অনুষ্ঠিত সভায় বেলকুচি, চৌহালী এবং এনায়েতপুর থানা বিএনপির উদ্যাগে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কয়েক কিলোমিটার দূরে চৌহালী উপজেলা থেকে ট্রলার এবং ছোট ছোট নৌকা দিয়ে যমুনা নদী পার হয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী এ স্মরণসভায় যোগ দেন। এছাড়াও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে নৌপথে, সড়কপথে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করেন। এ স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে যমুনা সেতু থেকে এনায়েতপুর পর্যন্ত লাগানো হয়েছে অসংখ্য তোরণ, ব্যানার এবং ফেস্টুন।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বনি আমিন ও এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জু সিকদারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, উপদেষ্টা ডা. এম এ মুহিত, বেলকুচি উপজেলার আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম গোলাম, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলতাব প্রামাণিক, এনায়েতপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক মন্টু সরকার, চৌহালী উপজেলার সভাপতি জাহিদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ময়নাল ক্বারী, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কায়েস, ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ, মহিলা দলের সভানেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন হাসি প্রমুখ।