শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) দলের নেতা অনুড়া কুমার দিসানায়েকে। তিনি একজন মার্ক্সবাদী নেতা হিসেবে বেশ জনপ্রিয় এবং তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সমাজতন্ত্র ও শ্রমিক শ্রেণির পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন ২১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করে।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া
এবারের নির্বাচনে শ্রীলঙ্কার জনগণ প্রথমবারের মতো এমন একটি নির্বাচন প্রত্যক্ষ করেছে যেখানে দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের ভিত্তিতে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়। কোনো প্রার্থী এককভাবে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায়, নির্বাচন কমিশন দ্বিতীয় ও তৃতীয় পছন্দের ভোট পুনরায় গণনা করে। এটি ছিল শ্রীলঙ্কার নির্বাচনী ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো এমন ভোট গণনার ঘটনা।
প্রাথমিক গণনার পর এনপিপি দলের অনুড়া কুমার দিসানায়েকে এবং বিরোধী দলের নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন। তবে যেহেতু কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি, তাই দ্বিতীয় পছন্দের প্রার্থীর ভোট পুনরায় গণনা করা হয়। দ্বিতীয় পছন্দের ভোট পুনর্গণনার পর দিসানায়েকে স্পষ্টভাবে এগিয়ে যান এবং তাকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
দিসানায়েকে ও তার রাজনৈতিক মতাদর্শ
অনুড়া কুমার দিসানায়েকে একজন কট্টর মার্ক্সবাদী নেতা হিসেবে পরিচিত। তার রাজনৈতিক জীবন শ্রমিক শ্রেণির পক্ষে এবং শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে পরিচালিত হয়েছে। তিনি জাতীয় পর্যায়ে সাম্যের বার্তা ছড়িয়ে দিতে এবং দেশটির বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের সমাধানে বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মসূচির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দিসানায়েকে অর্থনৈতিক ন্যায্যতা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, এবং দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি শ্রীলঙ্কার বর্তমান আর্থিক সংকট ও বৈদেশিক ঋণ সংকটের বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দিতে চান এবং জনসাধারণের জন্য সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা জোরদার করার পরিকল্পনা করেছেন।
শপথ গ্রহণ
প্রাথমিক ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর, দিসানায়েকে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন। এই নতুন প্রশাসন থেকে শ্রীলঙ্কার জনগণ অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও রাজনৈতিক স্থিরতার প্রত্যাশা করছে, বিশেষ করে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেশটি ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট ও বিক্ষোভের মুখোমুখি হওয়ার পর।
এই নির্বাচনে দিসানায়েকের বিজয় শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে মার্ক্সবাদী আদর্শের নেতাকে প্রেসিডেন্ট পদে দেখা যাচ্ছে।