স্বর্না দাসের পরিবারের সাথে দেখা করেছেন জামায়েত ইসলামীর প্রতিনিধি

Date: 2024-09-16
news-banner

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দ্বারা গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে মৌলভীবাজার জেলা জামায়াত।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা জামায়াতের নেতারা স্বর্ণা দাসের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমীর প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি আলাউদ্দিন শাহ, জুড়ী উপজেলা আমীর হাফেজ নাজমুল ইসলাম, উপজেলা নায়েবে আমির আব্দুল হাই হেলাল, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি লুৎফর রহমান আজাদী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসাইন, সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি সাজিদ মাহমুদ, আহমদ আলী, শহিদুল হক কুনু, ইউপি সদস্য মদন মোহন দাশ এবং আব্দুল হেকিম বাবুল।

ইউপি সদস্য মদন মোহন দাশ বলেন, "স্বর্ণা দাস মামার বাড়িতে যাওয়ার পথে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। সে স্থানীয় নিরোধ বিহারি স্কুলে পড়াশোনা করত। নিহতের পর আমাকে বলা হয় গাড়ি নিয়ে সীমান্ত থেকে লাশ আনার জন্য। লাশ নিয়ে এসে দাহ করি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিএসএফ চাইলে গুলি না করে তাকে আটক করতে পারত। সরাসরি গুলি করে মেয়েটিকে হত্যা করা যুক্তিযুক্ত নয়।"

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, "জুড়ী তথা পুরো বাংলাদেশ স্বর্ণা দাসের ঘটনায় মর্মাহত। আমরা সকল ধর্মের মানুষ একসঙ্গে বসবাস করি, আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য রাষ্ট্রীয় আইনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, কিন্তু একজনকে গুলি করে হত্যা করা কোনভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।"

তিনি বলেন, "এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে বিচার দাবি করছি এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।"

জেলা জামায়াতের আমীর প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী জানান, "স্বর্ণা দাসের হত্যার খবর শুনে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছি। সীমান্তে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের মত এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়। মানুষকে এভাবে গুলি করে হত্যা করা মানবাধিকার লঙ্ঘন। স্বর্ণা একজন নিরপরাধ মেয়ে, সে চোরাকারবারি নয়, সন্ত্রাসী নয়। কেন তাকে এভাবে হত্যা করা হবে? সে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল, এটি তার অপরাধ ছিল না।"

তিনি আরও বলেন, "যদি আমাদের কার্যকর উদ্যোগ থাকতো, তবে সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। পাশ্ববর্তী রাষ্ট্র যদি পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করে, তবে এটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কোনো নিদর্শন হতে পারে না। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।"

উল্লেখ্য, কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত দিয়ে মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হন স্বর্ণা দাস। এই ঘটনাটি ঘটে ১ সেপ্টেম্বর রাতে সীমান্ত এলাকায়। স্বর্ণা দাস জুড়ী উপজেলার পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে।

Leave Your Comments