সৌদি আরবে আবাসন, শ্রম এবং সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ২০ হাজারের বেশি প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। গত এক সপ্তাহে চালানো অভিযানে এই গ্রেপ্তারগুলো সম্পন্ন হয়েছে বলে সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত চালানো এই অভিযানে মোট ২০,৩৬৩ জন প্রবাসীকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে আবাসন আইন লঙ্ঘনের কারণে ১১,৫২৩ জন, সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৫,৭১১ জন এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ৩,৫৪৪ জন প্রবাসী রয়েছেন।
অভিযানে আরো দেখা যায় যে, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টার সময় এক হাজার ৫৬৯ জন প্রবাসীকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ২৪ শতাংশ ইয়েমেনি, ৭৩ শতাংশ ইথিওপিয়ান, এবং বাকিরা বিভিন্ন দেশের নাগরিক। এছাড়াও অবৈধ উপায়ে সৌদি আরব ত্যাগের চেষ্টার জন্য ৬৩ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে ২০ হাজার ৩৬৩ জন প্রবাসীর বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে, যাদের মধ্যে ১৭ হাজার ৯১৫ জন পুরুষ এবং দুই হাজার ৪৪৮ জন নারী। এই প্রবাসীদের মধ্যে ১২ হাজার ১৩৮ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর আগে তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ভ্রমণ নথি সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৯,২৫৪ জনকে সৌদি আরব থেকে নিজ দেশে পাঠানো হয়েছে। আরও ৩,১২৮ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা এবং এই কাজে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি রয়েছে। এই অপরাধের জন্য ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়ে আসছে।
দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মক্কা, রিয়াদ এবং পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে বসবাসরত নাগরিকদের জন্য ৯১১ এবং অন্যান্য অঞ্চলে ৯৯৯ ও ৯৯৬ নম্বরে আইনলঙ্ঘনকারীদের সম্পর্কে তথ্য দেওয়ার জন্য একটি সরকারি হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে।
সৌদি আরবের জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন। আইন লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত অভিযানে প্রবাসীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমে নিয়মিত প্রকাশ করা হচ্ছে।