চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে রাউজানের নোয়াপাড়া এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীরা।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় দোকানি মো. মহিউদ্দিন নোয়াপাড়া থেকে বাড়ি ফেরার সময় নিরামিষপাড়া এলাকায় ২০-২৫ জনের একটি দল তাঁর পথ আটকায়। তারা মোবাইল ফোনে মেসেজ দেওয়ার অভিযোগে মহিউদ্দিনকে মারধর ও কোপাতে থাকে। প্রাণ রক্ষা করতে দৌড়ে পালিয়ে যান তিনি।
ঘণ্টাখানেক পর, রাত ১০টার দিকে ১৫-২০ মুখোশধারী এসে এলোমেলো গুলি ছোড়ে। গোলাম আকবরের অনুসারীরা প্রথমে গুলি চালায় বলে স্থানীয়রা জানায়। পরে গিয়াস কাদেরের অনুসারীরাও পাল্টা গুলি চালায়। এ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত হন অন্তত ১৫ জন। আহতদের মধ্যে ১১ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার শিকার মহিউদ্দিন গিয়াস কাদেরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি বলেন, “বাড়ি ফেরার সময় রাতের অন্ধকারে আমাকে আক্রমণ করা হয়। কাউকে চিনতে পারিনি। কোনোমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়েছি।”
রাউজান থানার ওসি মীর মাহাবুবুর রহমান জানান, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরেই সংঘর্ষ হয়েছে। এক পক্ষের সদস্যরা ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে গিয়াস কাদেরের সমর্থক কামাল উদ্দিনকে আক্রমণের চেষ্টা করে। স্থানীয়রা এগিয়ে এলে মুখোশধারীরা এলোমেলো গুলি ছোড়ে।
সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) হুমায়ুন কবির জানান, অস্ত্রধারীদের শনাক্ত ও আটক করতে অভিযান চলছে।
চমেক হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. রিভু রাজ চক্রবর্তী জানান, আহতদের মধ্যে তিনজনের শরীরে জখমের দাগ রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া বাকিরা সুস্থ হলেও আতঙ্কে রয়েছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, সংঘর্ষের পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চলমান বিরোধ ও সংঘর্ষ নিয়ে ইতোমধ্যে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন গোলাম আকবর খোন্দকার।