পুলিশ বাহিনীকে জনগণের সেবামূলক একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম। তিনি বলেন, “পুলিশি সেবা নিতে থানায় আসা মানুষকে ভালো ব্যবহার ও মানসম্পন্ন সেবা দিতে হবে, যা পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।”
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত অক্টোবর মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
আইজিপি থানার ওসিদের উদ্দেশে বলেন, “থানা হলো পুলিশি সেবার কেন্দ্রবিন্দু। থানায় আগত প্রত্যেক ব্যক্তি ভিকটিম, বাদী বা সাক্ষী হিসেবে আসেন। তাদের সঙ্গে সদাচরণ করে সঠিক সেবা দেওয়া পুলিশের দায়িত্ব। এভাবেই পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা তৈরি করতে হবে।”
আইজিপি বলেন, “অপরাধ প্রবণ স্থানগুলো চিহ্নিত করে নাগরিক কমিটির সহযোগিতায় অপরাধ প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। কোনো অপরাধ আড়াল করা যাবে না এবং প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ইন্টেলিজেন্স-ভিত্তিক পুলিশিং বাড়াতে হবে। সংঘবদ্ধ অপরাধ, চুরি, ছিনতাই ও কিশোর গ্যাং কার্যক্রম প্রতিরোধে আগাম তথ্য সংগ্রহের ওপর জোর দেন আইজিপি।
ঢাকা শহরের যানজট সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আইজিপি ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের প্রশংসা করেন। একই সঙ্গে যানজট নিরসনে আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
আইজিপি বলেন, “পুলিশের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। আধুনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব পুলিশ সদস্যকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, “ঢাকার আড়াই কোটি মানুষের সেবা দিতে ডিএমপি সর্বদা প্রস্তুত। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করতে এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলোতে চেকপোস্ট ও টহল বাড়াতে হবে এবং জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার মাধ্যমে অপরাধ প্রতিরোধে উদ্যোগ নিতে হবে।”
মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় অক্টোবর মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি উপস্থাপন করেন যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ফারুক হোসেন। সভায় ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন পুলিশ সদস্যকে পুরস্কৃত করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন থানার ওসিরা।