বাংলাদেশে নির্বাচন সংস্কার: আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনের দাবি জোরালো হচ্ছে

Date: 2024-10-20
news-banner
বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর নির্বাচনী ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে ছোট ও মধ্যম আকারের দলগুলো, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন (পিআর) পদ্ধতি চালুর দাবি তুলেছে। সম্প্রতি এক সেমিনারে জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই পদ্ধতির পক্ষে তাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে।

আনুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা এমন একটি পদ্ধতি যেখানে দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদের আসন বণ্টন করা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কোনো দল যদি ১০ শতাংশ ভোট পায়, তাহলে সংসদের ১০ শতাংশ আসন সেই দল পাবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদ্ধতিতে প্রতিটি ভোটের সঠিক মূল্যায়ন হয় এবং ভোটারের মতামত স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।

নির্বাচন বিশ্লেষক অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ মনে করেন, আনুপাতিক পদ্ধতি সুশাসন নিশ্চিতকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, "যদি কোনো দল নির্বাচনে যত শতাংশ ভোট পায়, সংসদে তারা সেই অনুপাতে আসন পায়, তবে এটি সুশাসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।"

তবে, বিএনপি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে আসছে এবং প্রচলিত সংসদীয় পদ্ধতিতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে রয়েছে। দলটি মনে করে, তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেতে সক্ষম এবং অন্য দলগুলোকে সমান সুযোগ দিতে আগ্রহী নয়। বিএনপির আপত্তির কারণে আনুপাতিক পদ্ধতি চালু করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, "বিএনপি মনে করে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাবে, তাই তারা অন্য কাউকে সুযোগ দিতে চায় না।" তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মতো বড় দলগুলো এই পদ্ধতি না চাওয়ায় পূর্বে এটি চালু করা সম্ভব হয়নি।

ছোট ও মধ্যম দলগুলোর জোরালো দাবির বিপরীতে বড় দলগুলোর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও, বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, জনমতের চাপ এবং অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের সমর্থন থাকলে এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা নেপালের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি স্বৈরশাসন বা একনায়কতন্ত্র রোধে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে।
সুত্র: বিবিসি বাংলা

Leave Your Comments