জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন অবিলম্বে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. চুন্নুকে অপসারণ এবং ২০২২ সালের নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগ আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। তার মতে, আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রণীত এই আইন গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারকে বিপন্ন করেছে। রবিবার বিকেলে রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
সামান্তা শারমিন বলেন, "গত দেড় দশকে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কাঠামো তৈরি করে জনগণকে জিম্মি করেছে। ২০২২ সালে গঠিত নির্বাচন কমিশন ছিল সেই ফ্যাসিবাদের অন্যতম হাতিয়ার। বর্তমান সরকারকেও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, গণঅভ্যুত্থানের দাবিগুলো উপেক্ষা করলে তা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল হবে।"
সামান্তা শারমিন দাবি করেন, ফ্যাসিস্ট কাঠামোকে টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সুকৌশলে নির্বাচন কমিশন আইন তৈরি করে নিজেদের অনুগত লোক নিয়োগ দেয়। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তারা হত্যা, গুম, অপহরণ ও ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতা ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের দাবি শুধু একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা বিলোপ করে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার আনাই এই আন্দোলনের লক্ষ্য।"
তিনি আরও বলেন, "ড. মুহম্মদ ইউনূসসহ বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা জনগণের প্রতিনিধি। রাজনৈতিক দলগুলোর চাপকে উপেক্ষা করে সংস্কারের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করাই তাদের দায়িত্ব।"
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র বলেন, "এ সরকার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত। কাজেই তাদেরকে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে। এক বছর সময় নিয়ে যথাযথ সংস্কার সম্পন্ন না করে তড়িঘড়ি নির্বাচন দিলে সরকারের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হবে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, "প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসকে ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষা বুঝতে হবে এবং তাদের আহ্বানে সাড়া দিতে হবে। সরকারের সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখনও সুযোগ আছে।"
সামান্তা শারমিন বলেন, "দুই হাজারের বেশি শহীদের রক্তে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য পূরণ না হলে তা তাদের আত্মত্যাগের সঙ্গে বেঈমানি হবে। আমরা আশা করি, সরকার ফ্যাসিবাদী কাঠামোর মূলোৎপাটনে জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ নেবে।"
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, এবং সদস্য আকরাম হোসেন, মশিউর রহমান ও আবু রায়হান খান।