এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) প্রফেসর এ বি এম রেজাউল করীম। সম্প্রতি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, “শিক্ষকদের যদি আমরা মনোতুষ্ট করতে না পারি, তাহলে আমরা ভারাক্রান্ত মন নিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন করতে পারবো না। এজন্য আমরা শিক্ষকদের সন্তুষ্ট করতে চাচ্ছি।
দুই দশকের বেশি আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা উৎসব ভাতা পেয়ে আসছেন। ২০০৩ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুকের সভাপতিত্বে এক সভায় শিক্ষকদের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে দুই ঈদে ২৫ শতাংশ করে ভাগ করে তা দেওয়া হয়। কর্মচারীদের জন্য শতভাগ বোনাসের সিদ্ধান্ত হয় এবং দুই ঈদে ৫০ শতাংশ করে দেওয়া হয়।
শিক্ষকরা বলছেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন ৯০ শতাংশে উন্নীত করে। ২০০৫ সালে চারদলীয় জোট সরকার তা শতভাগে উন্নীতের ঘোষণা দিলেও বাস্তবায়ন হয় ৯৫ শতাংশ। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তা পূর্ণ শতভাগে নিয়ে যায়। কিন্তু উৎসব ভাতা বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, এবারও ঈদুল ফিতরে ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পাচ্ছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ইতোমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ২৪০ কোটি টাকা উৎসব ভাতা বরাদ্দ করেছে, যা ৩০ হাজারের বেশি বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এছাড়া, তারা এপ্রিল মাসের বেতন বাবদ ৭৮৩ কোটি ৫১ লাখ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা পাবেন।
বেতন স্কেলের ভিত্তিতে শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, কলেজের অধ্যক্ষরা ৫০ হাজার টাকা স্কেলে, সহকারী অধ্যাপকরা ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা স্কেলে এবং সহকারী শিক্ষকদের (বিএড ব্যতীত) বেতন স্কেল ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
কর্মচারীদের মধ্যে টাইম স্কেলপ্রাপ্ত তৃতীয় শ্রেণির কর্মীরা ৯ হাজার ৭০০ টাকা এবং টাইম স্কেল ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির কর্মীরা ৯ হাজার ৩০০ টাকা বেতন স্কেলে ৫০ শতাংশ বোনাস পাবেন।
শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন। বেতন স্কেল বৃদ্ধি হলেও উৎসব ভাতা বাড়ানো হয়নি, যা নিয়ে শিক্ষক সমাজের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে এবং শিগগিরই সিদ্ধান্ত আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা প্রকাশ করেছেন।
শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কীভাবে তাদের আরও সুবিধা দেওয়া যায়, তা নিয়ে কাজ করছে এবং নতুন নীতিমালা তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে।