শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুষ্টিয়ায় শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়া, টনসিলাইটিস, ব্রঙ্কিওলাইটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত শিশুরা দলে দলে ভর্তি হচ্ছে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। তবে মাত্র ২০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ১৬০ শিশু। শয্যা সংকটের কারণে বারান্দা ও মেঝেতে ঠাঁই নিতে বাধ্য হচ্ছে অনেকেই।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন শিশু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন ২৫০ থেকে ৩৫০ জন শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে। ধারণক্ষমতার চেয়ে আটগুণ বেশি রোগী থাকায় চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে উপচে পড়া ভিড়। ওয়ার্ডের মেঝে ও বারান্দা গাদাগাদি করে রোগীতে ভরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে চিকিৎসক ও নার্সরা নিরলস চেষ্টা করলেও রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করছেন সেবা ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কথা।
রোগীর মা সেলিনা খাতুন বলেন, "আমার বাবুর ঠান্ডা লেগেছে। হাসপাতালে ভর্তি করার পরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রচুর ভিড়ের কারণে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি।"
আরেক রোগীর স্বজন জুয়েল রানা অভিযোগ করেন, "সরকারি হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা চরমে। ওষুধ মেলে না, চিকিৎসকরা সময়মতো আসেন না। নার্সদের আচরণ অসৌজন্যমূলক।"
শিশু ওয়ার্ডের এক নার্স বলেন, "হঠাৎ রোগীর চাপ বেড়ে গেছে। রোগীর তুলনায় জনবল কম থাকায় সেবা দিতে কষ্ট হচ্ছে। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।"
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, "শীতের কারণে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়েছে। আমরা সাধ্যমতো চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করছি। তবে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ চালু হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে এবং ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।"
রোগীর স্বজনরা হাসপাতালের জনবল বাড়ানো, শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে অব্যবস্থাপনা দূর করার দাবি জানিয়েছেন।