অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের মানে কোনো পার্থক্য নেই, পার্থক্য কেবল দামে। তিনি নিজেও বাজার থেকে খোলা সয়াবিন তেল কিনে খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত ‘খাদ্য পণ্যের যৌক্তিক দাম: বাজার তত্ত্বাবধানের কৌশল অনুসন্ধান’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ছোটবেলায় আমি দেখেছি, আমার আব্বা বা বাসার লোকজন খোলা তেল নিয়ে আসতেন। আমার কাছে মনে হয় এটা মূল্য সাশ্রয়ী। কেন আমি খামোখা প্যাকেটজাত তেল খেতে যাব?’
আসন্ন রমজান মাসে নিত্যপণ্যের কোনো সংকট হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন তিনি। শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘এস আলম গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে ভোগ্যপণ্য আমদানি করছিল। তাদের অনুপস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অংশীজনদের নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থাপনা করেছে। ফলে এখন পর্যন্ত বড় কোনো সংকট তৈরি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুরের কোনো সংকট নেই। আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমেছে, ফলে দেশের বাজারেও দাম কমার কথা। দাম বাড়ার কোনো কারণ আমি দেখি না।’
ব্যবসায়ীদের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সঙ্গে ব্যবসা করার আহ্বান জানিয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘গত ১৫ বছরে টিসিবিকে ধ্বংস করা হয়েছে। মাত্র ১৪২ জন কর্মী দিয়ে ১২ হাজার কোটি টাকার অপারেশন পরিচালনা করা হচ্ছে। খুব অল্প সংখ্যক ব্যবসায়ী টিসিবির সঙ্গে কাজ করেন। আমি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করব, আপনারা টিসিবির সঙ্গে ব্যবসা করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটা পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়া দরকার। কারণ, বায়তুল মোকাররমের খতিবের যদি পালিয়ে যাওয়া লাগে, তাহলে বুঝতে হবে কী পরিমাণ ধ্বংস করা হয়েছে সব খাত। হেন কোনো প্রতিষ্ঠান ছিল না, যা ধ্বংস করা হয়নি। সব অপরাধীর মধ্যে একটা জোট তৈরি হয়েছিল।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, দেশের অর্থনৈতিক ও বাজারব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই বাজারে স্থিতিশীলতা আসুক। এজন্য ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় সরকারের পক্ষ থেকে রমজানে নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার আশ্বাস দেওয়া হলো।