বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাতে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যাচ্ছেন। কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি যাত্রা করবেন। রোববার (৫ জানুয়ারি) দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী, জনগণের প্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য আমরা বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি মঙ্গলবার লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।”
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ এবং কিডনি সমস্যাসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছেন। তার অসুস্থতার খবর শুনে কাতারের আমিরের পক্ষ থেকে রাজকীয় বহরের একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়। বিমানটিতে সর্বাধুনিক চিকিৎসা সুবিধা রয়েছে।
লন্ডনে পৌঁছানোর পর তিনি তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় কয়েকদিন থাকবেন। সেখান থেকে লিভারের উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে অবস্থিত জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের মাল্টি ডিসিপ্লিনারি কেয়ার ইউনিটে তার লিভার ট্রান্সপ্লান্টের জন্য বিশেষায়িত চিকিৎসা হবে। ইতোমধ্যে তার চিকিৎসার কাগজপত্র ও প্রয়োজনীয় পরীক্ষার রিপোর্টগুলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে তার লিভারের জটিল সমস্যা নিরসনে গত অক্টোবর মাসে বিশেষ পদ্ধতি টিআইপিস (ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রা-হেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট) সফলভাবে সম্পন্ন করেন তিনজন বিশেষজ্ঞ। তারা বর্তমানে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত এবং তার চিকিৎসা পরিচালনা করবেন।
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনা চলছে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকলেও তার চিকিৎসা নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে তার চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রে তার উন্নত চিকিৎসার এই উদ্যোগ বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে আশা জাগিয়েছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা নেত্রীর সুস্থতা কামনা করছি এবং তিনি সুস্থ হয়ে আবার দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশাবাদী।”