বাংলাদেশের ছোটপর্দার নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান আজ ৫৮ বছরে পা রাখলেন। ১৯৬৭ সালের ৪ অক্টোবর সিরাজগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করা এই জনপ্রিয় অভিনেতা ৫৭টি বসন্ত পার করে আজ নতুন একটি বছর শুরু করলেন। দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অসংখ্য জনপ্রিয় নাটক, টেলিছবি এবং চলচ্চিত্র উপহার দিয়ে তিনি নিজেকে বাংলাদেশি বিনোদন জগতে এক বিশিষ্ট নাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
জাহিদ হাসানের অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা শুরু হয় শৈশবেই। তিনি শৈশব থেকে নাটক ও যাত্রা উপভোগ করতেন এবং উচ্চমাধ্যমিক পড়াকালেই তার মধ্যে মঞ্চনাটকের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। তিনি মঞ্চনাটকের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন, যা তাকে অভিনয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। যদিও মা-বাবা চেয়েছিলেন তিনি ডাক্তার হোন, জাহিদ হাসান তার অভিনয়ের স্বপ্নকে অনুসরণ করে থিয়েটারে কাজ শুরু করেন।
ঢাকায় এসে জাহিদ হাসান কঠিন পথ পাড়ি দিয়েছেন, অনেকের কাছ থেকে তেমন সহযোগিতা না পেলেও হাল ছাড়েননি। ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে বিটিভির নাটকে অভিনয়ের সুযোগ পান এবং ধীরে ধীরে তার কাজের প্রস্তাব বাড়তে থাকে। নাট্যকেন্দ্রের নাটক ‘বিচ্ছু’তে অভিনয় করে তিনি প্রথম বড় পরিচিতি লাভ করেন। এরপর তিনি হুমায়ূন আহমেদের ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন’, ‘আজ রবিবার’-এর মতো জনপ্রিয় নাটকগুলোর মাধ্যমে সবার হৃদয়ে স্থান করে নেন।
নাটক ও টেলিছবির পাশাপাশি জাহিদ হাসান চলচ্চিত্রেও সফলভাবে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৮৬ সালে আব্দুল লতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘বলবান’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় তার অভিষেক ঘটে। এরপর হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, তৌকীর আহমেদের ‘হালদা’, এবং গোলাম সোহরাব দোদুলের ‘সাপলুডু’ সিনেমাগুলোতে তার অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
জাহিদ হাসান আজও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং তার অসামান্য অভিনয়শৈলী তাকে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।