যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঠিক তদন্ত চেয়ে মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস ওয়াচডগের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে যে, তিনি বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের দেওয়া ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এবং ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, লন্ডনের কিং’স ক্রস এলাকায় ২০০৪ সালে একটি ফ্ল্যাট টিউলিপ সিদ্দিককে উপহার হিসেবে দেন আবদুল মোতালিফ নামের এক ডেভেলপার। মোতালিফ বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন। অভিযোগ অনুযায়ী, ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড মূল্যে ক্রয়কৃত এই ফ্ল্যাট একই বছরের বাজারদরের তুলনায় অস্বাভাবিক কম দামে কেনা হয়েছিল।
যুক্তরাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রি রেকর্ড অনুযায়ী, ফ্ল্যাটটি টিউলিপ সিদ্দিকের নামে স্থানান্তরিত হয় এবং এর কোনো মূল্য বা মর্টগেজ উল্লেখ ছিল না। ওই সময়ে টিউলিপ সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করেছিলেন এবং কোনো উপার্জন ছিল না। বর্তমানে, ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়ে বছরে প্রায় ৯০ হাজার পাউন্ড আয় করছেন তিনি।
টিউলিপ সিদ্দিক লাউরি ম্যাগনাসকে লেখা চিঠিতে জানিয়েছেন, তার মন্ত্রীত্বের নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে কি না তা নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, “গত কয়েক সপ্তাহে আমার আর্থিক বিষয় ও বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো হয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত, আমি কোনো ভুল করিনি। সন্দেহ দূর করতে আমি চাই এ বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত হোক।”
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল টরি পার্টি মন্ত্রীত্ব থেকে টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছে। টরি এমপিরা বলেছেন, অভিযোগের স্বচ্ছ ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হলে তার পদে থাকা উচিত নয়।
লেবার পার্টির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে টিউলিপ সিদ্দিকের অতীত রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং তার প্রভাব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
ফ্ল্যাটটির মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য কোনো নির্বাচনী হলফনামায় উল্লেখ করেননি টিউলিপ। তিনি যুক্তরাজ্যের হাইগেট এবং হ্যাম্পস্টেড এলাকায় থাকা ফ্ল্যাট সম্পর্কে হলফনামায় তথ্য দিয়েছিলেন।
টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হলে এটি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বড় ধাক্কা হতে পারে। এছাড়া, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে তার পরিবারের ঘনিষ্ঠতা ও সম্পদ সম্পর্কিত বিষয়গুলো আরও গভীর পর্যবেক্ষণের আওতায় আসতে পারে।