স্বাধীন ডেস্ক:
চীন সেভেন সিস্টার্সের অন্তর্ভুক্ত অরুণাচল প্রদেশের কাছে স্পর্শকাতর সীমান্তে একটি হেলিপোর্ট নির্মাণ করছে, যা ভারত-চীন সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। হেলিপোর্টটি নির্মিত হচ্ছে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (LAC) থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বে। এই হেলিপোর্ট চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA)-কে দ্রুত সামরিক সরঞ্জাম, সেনা এবং লজিস্টিক সাপোর্ট অরুণাচল প্রদেশের কাছাকাছি দুর্গম সীমান্ত এলাকায় পাঠানোর সক্ষমতা প্রদান করবে। এর মাধ্যমে অঞ্চলটিতে সামরিক সংঘাতের সময় চীন দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি একটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে, যা মার্কিন প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সারের তোলা। এতে দেখা গেছে, ২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হেলিপোর্ট নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। অঞ্চলটি তিব্বতের নিয়াংচি প্রিফেকচারের গংরিগাবু কিউ নদীর তীরে অবস্থিত, যা চীনের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকা বলে নয়াদিল্লি বিবেচনা করে, তবে সেখানে কোনো ভৌগোলিক বিবাদ নেই।
ইওএস ডাটা এনালিটিকসের প্রকাশিত আগের স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অঞ্চলে কোনো স্থাপনা ছিল না। তবে ৩১ ডিসেম্বরের ছবিতে দেখা যায়, নির্মাণকাজের জন্য জায়গা পরিষ্কার করা হয়েছে। তখনো ঠিক কী নির্মাণ করা হচ্ছে তা স্পষ্ট ছিল না। পরে দেখা যায়, সেখানে হেলিপোর্ট তৈরি হচ্ছে, যা PLA-কে সীমান্ত অঞ্চলে আরও সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ দেবে।
জিওস্প্যাশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন বলেন, নতুন এই হেলিপোর্টের মাধ্যমে PLA-এর নজরদারি, গোয়েন্দা কার্যক্রম এবং গুপ্তচরবৃত্তির মাত্রা বাড়বে। এর ফলে PLA খুব দ্রুত দূরবর্তী এলাকায় সেনা মোতায়েন করতে পারবে এবং চীনের সামরিক আধিপত্য আরও সুসংহত হবে।
ভারত এরই মধ্যে সীমান্তে চীনের ক্রমবর্ধমান কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে, অরুণাচল প্রদেশে চীনা সেনাদের প্রবেশের বিষয়ে সম্প্রতি খবর ছড়িয়েছে, যেখানে বলা হয় চীনা সেনারা আনজাও জেলার কাপাপুতে প্রবেশ করেছে। তারা সেখানে কাঠ পুড়িয়ে এবং পাথরে রঙ দিয়ে চীনের নাম লিখে এক ধরনের প্রতীক তৈরি করেছে, যা এক সপ্তাহ আগে চীনা সেনাদের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। এর আগেও চীনা সেনারা ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য এমন কৌশল নিয়েছে।
এদিকে লাদাখেও ভারতের ভূমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চীনের সঙ্গে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারছেন না এবং এর ফলে চীন লাদাখে দিল্লির সমপরিমাণ ভূমি দখল করেছে।