দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গৃহীত গণত্রাণ কর্মসূচির পূর্ণাঙ্গ অডিট রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, গণত্রাণ কর্মসূচির মোট আয় হয়েছে ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা, যার মধ্যে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। বর্তমানে দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৯ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ টাকা জমা রয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই অডিট ঘোষণা করেন পিকেএফ আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী চার্টার্ড অ্যাকাউন্টের পার্টনার এবং আন্দোলনের অডিটর গোলাম ফজলুল কবির। অডিটের উদ্দেশ্য ছিল গণত্রাণ কর্মসূচির আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।
আয়ের উৎস:
অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী, বন্যার্তদের জন্য মোট আয় ১১ কোটি ৬৯ লাখ ৮৪ হাজার ৪২০ টাকা। এর মধ্যে নগদ সংগ্রহ করা হয়েছে ৯ কোটি ৮৫ লাখ ১৫ হাজার ৭২৫ টাকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে ৭৮ লাখ ৫৭ হাজার ২১৬ টাকা, এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৯৯ লাখ ৪৪ হাজার ৩৬৯ টাকা। এছাড়া ডলার, স্বর্ণ, প্রাইজবন্ড ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রির মাধ্যমে সংগ্রহ হয়েছে ৬ লাখ ৬৭ হাজার ১১০ টাকা।
ব্যয়ের বিবরণ:
মোট ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ টাকা, যার মধ্যে রিলিফ কেনার জন্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯২ হাজার ১৩০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সংগঠনকে ডোনেশন হিসেবে দেওয়া হয়েছে ১২ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা, পরিবহন খরচ বাবদ ৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, এবং ভলান্টিয়ারদের জন্য খরচ হয়েছে ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৭ টাকা। প্যাকেজিং পণ্য কেনা বাবদ ব্যয় হয়েছে ১১ লাখ ২৪ হাজার ৯৪০ টাকা এবং অন্যান্য খরচ ৩ হাজার ১২০ টাকা।
অডিটের স্বচ্ছতা ও সময়:
গোলাম ফজলুল কবির জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর অডিট শুরু হয় এবং ৩০ সেপ্টেম্বর এটি শেষ হয়। তিনি আরও জানান, সমন্বয়কারীরা প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিলেন, যা পরে ব্যাখ্যা করে সংশোধন করা হয়। এছাড়া হিসাবের মধ্যে ২ লাখ টাকার কয়েন ও স্ক্র্যাপ বিক্রির অর্থ হিসাব করতেও সময় লেগেছে।
অডিট রিপোর্ট প্রকাশের মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা তাদের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে, যা জনগণের আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে।