জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. ইউনূস এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। এই বৈঠকটি নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকে ড. ইউনূস বাংলাদেশে বিগত সরকারের আমলে শিক্ষার্থীদের সাহসী ভূমিকা ও দেশ পুনর্গঠনে তাদের অবদানের বিষয়টি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সামনে তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, কীভাবে বাংলাদেশ পুনর্গঠনে শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং সরকারের জন্য তাদের সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ড. ইউনূস দৃঢ়ভাবে বলেন, তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অবশ্যই সফল হতে হবে এবং এই প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দেন এবং বাংলাদেশের সরকারকে যেকোনো প্রকার সহায়তা দেওয়ার জন্য তার আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচিত হয় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শিক্ষাখাতের অগ্রগতি, এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার গুরুত্ব।
বৈঠক শেষে, ড. ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ শীর্ষক একটি আর্টবুক উপহার দেন, যা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রের সংগ্রহ। এই দেয়ালচিত্রগুলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পুনর্গঠনের সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে। বাইডেন এই আর্টবুকটি গ্রহণ করে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও সংগ্রামের প্রশংসা করেন।
প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম বৈঠকটিকে একটি "ঐতিহাসিক মাইলফলক" হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, কারণ এর আগে জাতিসংঘ অধিবেশনের সময় এমন উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক কখনো হয়নি। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং আগামী দিনগুলোতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পেশাদার কূটনীতিকরাও এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং বলেছেন, ৩০ বছর পর এমন একটি বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে।