ডেস্ক নিউজ :
সন্তানদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তুলতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম।
তিনি বলেছেন, ‘যে আপনাদের কথা শুনবে, আপনাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে, তাকেই আগামী সংসদে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করবেন। একটা জিনিস মনে রাখবেন, দল আর মার্কা দেখার সময় শেষ, এখন সময় যোগ্যতা দেখার।’
গতকাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠের বটতলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সারজিস আলম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, ‘যে আপনাদের কথা শুনবে, আপনাদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকবে, তাকেই আগামী সংসদে আপনার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করবেন। একটা জিনিস মনে রাখবেন, দল আর মার্কা দেখার সময় শেষ, এখন সময় যোগ্যতা দেখার।’
গতকাল শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠের বটতলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সারজিস আলম এসব কথা বলেন।
গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের সঙ্গে জেলায় জেলায় মতবিনিময় সভা শুরু হয়েছে। ‘গণ-অভ্যুত্থানের প্রেরণায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিক মতবিনিময় সভা’ শিরোনামে গতকাল পঞ্চগড়, জয়পুরহাট, লক্ষ্মীপুর ও ময়মনসিংহে সভার আয়োজন করা হয়। অবশ্য স্থানীয় সমন্বয়কদের বিরোধিতার মুখে ময়মনসিংহের মতবিনিময় সভাটি হয়নি।
পঞ্চগড়ের সভায় সারজিস আলম বলেন, ‘পঞ্চগড় সীমান্তবর্তী একটি জেলা। এই পঞ্চগড়ের ভাইয়েরা ভারতের সীমান্তে যাওয়ার আগেই বিএসএফের গুলি খেয়ে মরতে হয়। পঞ্চগড়ের মানুষ কি নিজের ভূমিতে থেকে গুলি খাওয়ার জন্য জন্মগ্রহণ করেছে? এর প্রতিটি গুলির বিচার ওই ফ্যাসিস্ট হাসিনা করতে পারেনি। আমরা পঞ্চগড়ের মানুষ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ওই খুনি হাসিনা থেকে শুরু করে যারা এই বিচারগুলো করতে দেয়নি, যারা ভারতের সেবাদাস হিসেবে ছিল, তাদের বিচার করতে হবে।’
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, ‘আজকের পর থেকে এই পঞ্চগড় নিয়ে যদি কোনো বৈষম্য হয়, তাহলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান—এই চার দেশের যে সীমান্ত, এই চার দেশের যে গলা, এই চার দেশের যে নিশ্বাস, এই চার দেশের যে হৃৎপিণ্ড, সেই হৃৎপিণ্ড তেঁতুলিয়া-বাংলাবান্ধা আমরা চিরতরে বন্ধ করে দেব।’
মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম, রাকিব রানা মাসুদ, আবু সাইদ লিয়ন, মিশু আলী সুহাস, সহসমন্বয়ক জহির রায়হান প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভায় পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, মোকাদ্দেসুর রহমান সান, খোরশেদ মাহমুদ, মখলেছার রহমান, হাবিবুর রহমান শাওনসহ পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে জেলা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভবনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা।
রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে
জয়পুরহাটে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে। গতকাল দুপুরে আয়োজিত সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘অবশ্যই রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে। যদি রাষ্ট্র সংস্কার না করা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবেন, তারাও স্বৈরশাসক হয়ে যেতে পারেন। এই জায়গাগুলো ঠিক করে দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে সংবিধান পুনর্লিখন করা দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘করপোরেট হাউস-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়াগুলো স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করেছে। এসব মিডিয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের খবর ঠিকভাবে প্রচার করেনি। যখন তীব্র আন্দোলন হচ্ছে, আন্দোলনকারীদের গুলি করে মারছিল, তখন সিচুয়েশন নরমাল (পরিস্থিতি স্বাভাবিক) আছে বলে খবর প্রচার করেছে।’
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন সমন্বয়ক কুররাতুল আইন কানিজ, সাইফুল ইসলাম, ইফতেখার আলম, আবদুল্লাহ আল মামুন, ফয়সাল আহমেদ, ফাতিন মাহতি, সাদিকুল ইসলাম, ঐশিক মণ্ডল ও ইমাম হুসাইন। বিকালে সমন্বয়কেরা শহীদ নজিবুল সরকার বিশালের বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর গ্রামে যান এবং তার কবর জিয়ারত করেন। সেখান থেকে ফিরে বিকাল ৪টায় শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে আরেকটি মতবিনিময় সভায় যোগ দেন তারা।
বাংলাদেশ গড়ার অগ্রণী হাতিয়ার তরুণরা
গতকাল বিকালে লক্ষ্মীপুর শহরের লিল্লাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে ছাত্র-নাগরিকদের মতবিনিময় সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল কাদির বলেন, ‘যারা বিগত দিনে হামলা, মামলা ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে করতে হবে। আমাদের লক্ষ্য একটাই, নতুন বাংলাদেশ গড়ার। সেই বাংলাদেশ গড়ার অগ্রণী হাতিয়ার আপনারা, তরুণেরাই।’
মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হামজা মাহবুব, জিয়া উদ্দিন আয়ান, সুমাইয়া আক্তার প্রমুখ বক্তব্য দেন।