ধামরাই উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বাসভবন থেকে পোড়া টাকার বান্ডিল উদ্ধারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে ধামরাইয়ের নাগরিক সমাজে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বাসভবন থেকে সাধারণ জনগণ পোড়া টাকার বান্ডিল বের করছে, যা নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠেছে। অনেকে প্রশ্ন করছেন, সরকারি কর্মকর্তার বাসায় এত টাকা কীভাবে এল এবং এর উৎস কী।
ভিডিওতে দেখা যায়, ইউএনও’র বাসভবনের বিভিন্ন কক্ষ থেকে লোকজন বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে বের হচ্ছে, কেউ হাঁস-মুরগি, কেউ টিস্যু বা অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে। কয়েকজনকে পোড়া টাকার বান্ডিল হাতে নিয়ে বের হতে দেখা যায়, যারা বলছিলেন বাসার ভেতরে সিন্দুকভর্তি টাকা ছিল। পোড়া টাকার মধ্যে ৫০০ ও ১,০০০ টাকার নোট ছিল বলে জানা গেছে। তবে ভিডিও ধারণকারী ব্যক্তি জানান, সিন্দুক কিংবা টাকা তিনি দেখতে পাননি, কারণ তার পৌঁছানোর আগেই সব নিয়ে যাওয়া হয়।
৫ আগস্ট, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তার বাসভবন থেকে পালিয়ে যান। বাসভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের সময় তিনি তার অসুস্থ বাবা-মাকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি। পরে সাধারণ জনগণ তার বৃদ্ধ বাবাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়।
ভিডিওটি প্রথমবার ২৫ সেপ্টেম্বর নাজমুল হাসান নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে প্রকাশিত হয়। ভিডিওটি প্রকাশের পর বিভিন্ন আইডি থেকে তা ভাইরাল হয়ে যায় এবং স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় ধামরাইয়ের সচেতন নাগরিকরা প্রশ্ন তুলেছেন, একজন ইউএনও’র বাসায় এত বিপুল পরিমাণ টাকা কেন থাকবে। স্থানীয় বাসিন্দা ইসরাফিল বলেন, “সেসময় ইউএনও’র বাসভবনে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ছিল বলে শুনেছি, যার বেশিরভাগই হামলাকারীরা লুট করে নিয়ে গেছে, আর কিছু টাকা আগুনে পুড়ে গেছে।”
ঘটনার পর খান মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন এবং পরে তিনি কর্মস্থলে যোগদান করেন। এরপর তাকে কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইনে বদলি করা হয়। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তানভীর আহমেদ জানান, ইউএনও’র বাসভবন থেকে পোড়া টাকার বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।