বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার অপেক্ষায় দিন গুনছে দলটির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। তিনি ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন লন্ডন থেকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার দেশে ফেরার গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে, যা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনার জন্ম দিয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং তিনি নিজেই দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। ফখরুল বলেন, "তারেক রহমান বীরের বেশে ফ্যাসিবাদমুক্ত দেশে ফিরবেন।" তিনি আরও বলেন, দলের নেতা-কর্মী এবং দেশের সাধারণ মানুষ তার আগমনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে থাকা বিভিন্ন মামলা এবং আইনি জটিলতা তার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের আইনজীবীরা ইতোমধ্যে মামলাগুলো নিষ্পত্তির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। একাধিক মামলায় বাদী পক্ষ থেকে মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে, আর বাকি মামলাগুলোও দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ চলছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরই তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হবে।
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপির ভেতরেও উৎসাহ রয়েছে। দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা তার নেতৃত্বে দেশে ফিরতে চায় এবং তাদের আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে চায়। সাবেক এমপি এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরউদ্দিন স্বপন বলেন, "তারেক রহমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তিনি সম্মানের সঙ্গে দেশে ফিরে আসবেন।"
তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে আলোচনা যখন তুঙ্গে, তখন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রস্তুতিও চলছে। জানা গেছে, তাকে লন্ডনের একটি উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই সময়ে তারেক রহমান হয়তো লন্ডনেই অবস্থান করতে পারেন, এবং তার মায়ের চিকিৎসা পরবর্তী সময়ে দেশে ফিরে আসার সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়ে উঠবে।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের দেশে ফেরা বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে দলের অভ্যন্তরে এবং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আরও সক্রিয়ভাবে দেখতে চান। বিশেষ করে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সংকট এবং আন্দোলনকে সামনে রেখে তার নেতৃত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সার্বিকভাবে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে পারে, যা দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও নতুন দিকনির্দেশনা তৈরি করতে পারে।