বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এবং রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ ডা. মিলন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মির্জা ফখরুল বলেন, “কিছুসংখ্যক মানুষ নিজেদের সবচেয়ে দেশপ্রেমিক মনে করেন। কিন্তু তাদের কর্মকাণ্ডে গোটা জাতি আজ বিভাজনের মুখে দাঁড়িয়েছে। ঠাণ্ডা মাথায় ভাবতে হবে, যারা দেশকে অনৈক্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তারা আসলে আমাদের শত্রু না মিত্র।”
প্রেসক্লাবের আলোচনায় মির্জা ফখরুল দেশের রাজনৈতিক পরিবেশের সমালোচনা করে বলেন, “তিন মাস হয়নি, রাস্তায় রাস্তায় লড়াই শুরু হয়েছে। পত্রিকা অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, মানুষকে আক্রমণ করা হচ্ছে। এ কোন বাংলাদেশ? ৫ আগস্টের আগে আমরা এমন বাংলাদেশ চিনতাম না। কেন এই হিংসা, কেন এই অস্থিরতা?”
তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর আমাদের সামনে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ ছিল। কিন্তু এর মধ্যেই বিভেদ, হিংসা এবং অনৈক্যের আসল চেহারা প্রকাশ পাচ্ছে। যতই বড় কথা বলা হোক না কেন, নিজের ঘরে যদি বিভাজন থাকে, তাহলে কোনো সাফল্য আসবে না।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “ধর্মকে কেন্দ্র করে দেশে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তা ভয়ঙ্কর। মুক্ত মিডিয়ার জন্য এত লড়াই করা সত্ত্বেও আজ সংবাদমাধ্যমের অফিস পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই বাংলাদেশ দেখতে চাই না, আমি অন্তত চাই না।”
তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত উগ্রতাবাদী বক্তব্য নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ফখরুল বলেন, “কিছু মানুষ সেখানে এমন কথাবার্তা বলছে যা আতঙ্ক তৈরি করে। পুড়িয়ে দাও, জ্বালিয়ে দাও—এ ধরনের উস্কানিমূলক কথাবার্তা আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এই পরিস্থিতি আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে সমাধানে কাজ করতে হবে। বিভাজনের রাজনীতি পরিহার না করলে আমাদের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসবে না।”
আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা, যারা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেন।