সিটিসেল ফেরার আশায়—বিটিআরসিতে আবেদন জমা, পুনরায় কার্যক্রম চালুর প্রত্যাশা

Date: 2024-11-08
news-banner

মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল এক সময় ছিল দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সেলফোন ব্র্যান্ড, যেটি সাশ্রয়ী কলরেট এবং উন্নত পরিষেবার মাধ্যমে গ্রাহকের মন জয় করেছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে তৎকালীন সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিল করা হয়, যা অপারেটরটির কার্যক্রমের অকাল সমাপ্তি ঘটায়। সিটিসেলের মূল প্রতিষ্ঠান প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (পিবিটিএল) এর চেয়ারম্যান ছিলেন বিএনপির সাবেক সিনিয়র নেতা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান। দীর্ঘ আট বছর কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি সিটিসেল তাদের লাইসেন্স ও স্পেকট্রাম ফেরত পেতে বিটিআরসিতে আবেদন করেছে।

বিটিআরসির তথ্যমতে, ২০১৬ সালে সিটিসেলের কাছে সরকারের ৪৭৭ কোটি টাকা পাওনা ছিল। সিটিসেল এরপর ২৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করলেও, এখনও তাদের ২৩৩ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। অন্যদিকে কোর্টের গঠিত তদন্ত কমিটি উল্লেখ করে, সিটিসেলকে বরাদ্দ দেওয়া তরঙ্গের পরিমাণ ছিল ১০ মেগাহার্জ। তবে বাস্তবে তারা পেয়েছে ৮.৮২ মেগাহার্জ তরঙ্গ, যার ভিত্তিতে সবশেষে সিটিসেলের বকেয়ার পরিমাণ নির্ধারিত হয় ১২৮ কোটি টাকা। তবে এ হিসাবেও আপত্তি রয়েছে সিটিসেলের।

সিটিসেল কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারের ওই সিদ্ধান্তে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২০০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি আরও দাবি করেছে, ব্র্যান্ডের সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়া ছাড়াও প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে যারা সিটিসেলের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। এর পাশাপাশি সরকারেরও প্রায় ৪৩০ কোটি টাকা কর এবং ফি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছে তারা।

সিটিসেল নতুন প্রযুক্তি এবং আরও সাশ্রয়ী পরিষেবা নিয়ে গ্রাহকদের কাছে ফেরার আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। তারা বলছে, সরকারের সমর্থন পেলে আবারও কার্যক্রম শুরু করে দেশের মোবাইল টেলিকম সেক্টরে প্রতিযোগিতা বাড়াতে সক্ষম হবে সিটিসেল। এদিকে বিটিআরসি জানিয়েছে, সিটিসেলের আবেদন পর্যালোচনা করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিটিসেলের পুনঃসক্রিয়তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনার সুর বেশ স্পষ্ট, বিশেষ করে এটি বাস্তবায়িত হলে দেশীয় মোবাইল ফোন সেবাদানে ভোক্তাদের কাছে আরও বিকল্প ও সাশ্রয়ী সেবা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

Leave Your Comments