আজ, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ছয় বছর হলো গিটার জাদুকর আইয়ুব বাচ্চু না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। ২০১৮ সালের এই দিনে লাখো ভক্ত-অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। তবে তার সুরের মূর্ছনা এখনো কোটি ভক্তের হৃদয়ে অমলিন। তার অসংখ্য কালজয়ী গান আজও বাঙালির সংগীতপ্রেমের অমূল্য ধন হিসেবে রয়ে গেছে।
১৯৯১ সালের ৫ এপ্রিল সোলস ছাড়ার পর নিজস্ব ব্যান্ড ‘এলআরবি’ গড়ে তোলেন আইয়ুব বাচ্চু। চট্টগ্রামের ছেলে বাচ্চুর সংগীতের প্রতি ভালোবাসা কিশোর বয়সেই তৈরি হয়েছিল। তিনি কলেজজীবনে সহপাঠী বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তোলেন ‘গোল্ডেন বয়েজ’ নামক একটি ব্যান্ড, যা পরবর্তীতে পরিচিতি পায় ‘আগলি বয়েজ’ নামে। সেই ব্যান্ডে গায়ক ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ আর বাচ্চু ছিলেন গিটারিস্ট। চট্টগ্রামের বিয়েবাড়ি, জন্মদিন ও নানা অনুষ্ঠানেই প্রথম গানের মঞ্চ মাতাতে শুরু করেছিলেন তারা।
চার দশকেরও বেশি সময়জুড়ে সংগীতজীবন কাটানো আইয়ুব বাচ্চু বাংলাদেশে ব্যান্ড সংগীতকে এক নতুন মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন। তার ব্যান্ড এলআরবির প্রথম ডাবল অ্যালবাম 'এলআরবি' এবং পরবর্তীতে ‘সুখ’, ‘তবুও’, ‘ঘুমন্ত শহরে’, ‘স্বপ্ন’, ‘যুদ্ধ’সহ অসংখ্য অ্যালবাম তাকে শীর্ষ জনপ্রিয়তায় নিয়ে যায়। একক শিল্পী হিসেবেও তিনি প্রকাশ করেছেন ‘রক্ত গোলাপ’, ‘ময়না’, ‘কষ্ট’, ‘সময়’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘কাফেলা’, ‘প্রেম প্রেমের মতো’, ‘জীবন’, ‘সাউন্ড অব সাইলেন্স’সহ বহু অ্যালবাম। তার সৃষ্ট গানগুলো শোনা হয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম।
‘সেই তুমি’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘এখন অনেক রাত’, ‘মেয়ে’, ‘কেউ সুখী নয়’, ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’, ‘এক আকাশের তারা’র মতো গানগুলো আজও শ্রোতাদের মুখে মুখে।
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে অবিস্মরণীয় অবদান রেখে যাওয়া আইয়ুব বাচ্চু আজও কোটি ভক্তের কাছে গিটার জাদুকর হিসেবেই পরিচিত। তার সৃষ্টির মাধুর্য ও গিটার সুরের ঐন্দ্রজালিক পরশ ভক্তদের হৃদয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে।