দেশের প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। দীর্ঘ সময় পর বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিপিএম-৬ হিসাব অনুযায়ী রিজার্ভ ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। তবে নেট ইন্টারন্যাশনাল রিজার্ভ (এনআইআর) এখনও ১৫ বিলিয়ন ডলারের নিচে অবস্থান করছে।
২০২১ সালের আগস্টে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। কিন্তু বিভিন্ন অনিয়ম, লাগামহীন অর্থ পাচার ও নীতিনির্ধারণী ব্যর্থতার কারণে রিজার্ভ ক্রমশ নিম্নমুখী হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার। তবে এনআইআর, যা শুধু আইএমএফকে জানানো হয়, তা বর্তমানে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার। তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে অন্তত ১৬.৫ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ প্রয়োজন হলেও বর্তমানে তা সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ১৯১ দশমিক ৩৭ কোটি ডলার, যা ছিল ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এরপর সরকার পরিবর্তন ও নতুন প্রচারণার ফলে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়তে শুরু করে। আগস্টে রেমিট্যান্স ২২২ দশমিক ৪১ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ দশমিক ৪৭ কোটি ডলার এবং অক্টোবরে ২৪০ কোটি ডলারে পৌঁছায়।
নভেম্বর মাসে প্রবাসী আয় বেড়ে ২২০ কোটি ডলার হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা দেশের রিজার্ভে কিছুটা স্বস্তি এনেছে, তবে এনআইআর এখনও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে।
বিশ্ব বাজারে আমদানি ব্যয়ের চাপ এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের কারণে রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় আরও সতর্ক হতে হবে। রিজার্ভ ধরে রাখতে এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকারি প্রচেষ্টা ও নীতি সহায়তার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ছে।