আজ ২৪ অক্টোবর, উপমহাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মান্না দে’র মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এই দিনে কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে ভারতের বেঙ্গালুরুতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ১৯১৯ সালের ১ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করা মান্না দে, যার আসল নাম প্রবোধ চন্দ্র দে, উপমহাদেশের সংগীত জগতে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন তার অবদান এবং অনন্য কণ্ঠের জন্য।
মান্না দে তার সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে "কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই", "শাওন রাতে যদি", "যদি কাগজে লেখো নাম", "তীর ভাঙা ঢেউ" সহ অনেক জনপ্রিয় গানের মাধ্যমে কোটি সংগীতপ্রেমীর হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছেন। বাংলা, হিন্দি, মারাঠি, গুজরাটিসহ প্রায় ২৪টি ভাষায় ষাট বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সংগীত পরিবেশন করেছেন। সংগীতবোদ্ধারা তাকে বৈচিত্র্যময় গায়কীর জন্য সবসময় ভারতীয় সংগীতের অন্যতম সেরা গায়ক হিসেবে স্বীকার করে থাকেন।
মান্না দে তার সংগীত জীবন শুরু করেন কাকা কৃষ্ণচন্দ্র দে’র কাছ থেকে গান শিখে। পরে উস্তাদ দবির খান, উস্তাদ আমান আলি খান ও উস্তাদ রহমান খানের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৭০ দশক পর্যন্ত তিনি মোহাম্মদ রফি এবং কিশোর কুমারের মতো গায়কদের সঙ্গে সমান জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার অসাধারণ প্রতিভা ও অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ এবং দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার প্রদান করে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারও তাকে "বঙ্গবিভূষণ" সম্মাননায় ভূষিত করে।
তার স্মরণে উত্তর কলকাতায় তার বাসস্থানের কাছে একটি মর্মর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে, যা তার অবদানের প্রতি চিরকালীন সম্মান প্রদর্শন করে। মান্না দে’র সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি গান আজও সংগীতপ্রেমীদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, এবং তার স্মৃতি ও সুর চিরকাল বেঁচে থাকবে সংগীতের অমর ভুবনে।