প্রতিবছর ৩ ডিসেম্বর পালিত হয় আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ১৯৯২ সালে গৃহীত ৪৭/৩ রেজুলেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ দিবসটি পালিত হয়। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, তাদের অধিকার রক্ষা এবং সমাজে পূর্ণ ও কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
প্রতিবন্ধীদের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণে প্রতিটি রাষ্ট্রকে রাজনীতি, অর্থনীতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রগুলোতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানানো হয়। প্রতিবছর এই দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের সদর দপ্তর নিউইয়র্কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, বিশ্বের সকল সদস্য রাষ্ট্র এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে নানা আয়োজন করে।
বাংলাদেশের ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত বা ইন্দ্রিয়গত দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিগ্রস্ততা এবং সেই সঙ্গে পরিবেশগত ও সামাজিক বাধা তার সমতার ভিত্তিতে সমাজে অংশগ্রহণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে তাকে প্রতিবন্ধী হিসাবে গণ্য করা হয়।
প্রতিবন্ধিতার ধরন হিসেবে শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত, বিকাশগত এবং ইন্দ্রিয়গত ক্ষতিগ্রস্ততার পাশাপাশি মানসিক আঘাতকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার অটিজম, সেরিব্রাল পালসি, ডাউন সিনড্রম এবং মানসিক অসুস্থতাসহ চারটি নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডারকে প্রতিবন্ধিকতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এসব ক্ষেত্রে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
বাংলাদেশ সরকার প্রতিবন্ধীদের অধিকারের বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। সুষ্ঠু নীতিমালা প্রণয়ন, বিশেষায়িত শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সেবা প্রদান নিশ্চিত করতে নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে অচিরেই বাংলাদেশ প্রতিবন্ধীদের অধিকারের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মডেল হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক এই দিবসে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব গ্রহণ এবং তাদের অধিকারে সচেতন থাকার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার।