আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হচ্ছে। ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশসহ এশিয়ার ১২টি দেশে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধ ও নির্মূলের লক্ষ্যে।
এবারের প্রতিপাদ্যে জলাতঙ্ক নির্মূলে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা, সমতার গুরুত্ব এবং ‘ওয়ান হেলথ’ ব্যবস্থার মাধ্যমে সামগ্রিক ব্যবস্থাকে সম্পন্ন করার বিষয়গুলোতে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ‘ওয়ান হেলথ’ হলো একটি একত্রীকৃত দৃষ্টিভঙ্গি, যা মানব স্বাস্থ্য, পশু স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কাজ করে।
সম্প্রতি কুকুর, বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর প্রাণীর কামড় ও আঁচড়ে আক্রান্ত হয়ে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ জলাতঙ্কের টিকা গ্রহণ করেছেন। এতে জলাতঙ্কে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তথ্যমতে, ২০১০ সালের আগে বাংলাদেশে প্রতিবছর জলাতঙ্কে ২০০০ এর বেশি মানুষ মারা যেত। ২০২৩ সালে এ সংখ্যা কমে মাত্র ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৪ জন।
জলাতঙ্ক বা র্যাবিস একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা র্যাবিস ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট। সংক্রমিত কুকুর এ রোগের প্রধান বাহক হলেও বিড়াল, শিয়াল, বেজি এবং বানরের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমেও রোগটি ছড়াতে পারে। বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর প্রায় ৫৯ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যায়। রোগের লক্ষণ একবার প্রকাশ পেলে মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত।
রোগটি প্রতিরোধযোগ্য হলেও সময়মত ব্যবস্থা না নিলে এর ঝুঁকি মারাত্মক। কামড় বা আঁচড়ের পরপরই আক্রান্ত স্থান সাবান ও পানি দিয়ে ধুয়ে পূর্ণ ডোজ টিকা নিলে জলাতঙ্ক শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন যে, যেকোনো প্রাণীর আক্রমণের পর দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জলাতঙ্ক নির্মূলে জনসচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি। প্রাণীদের টিকাদান, পথকুকুর নিয়ন্ত্রণ, এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করা জলাতঙ্ক প্রতিরোধের মূল কৌশল। জলাতঙ্ক নির্মূলের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এ বছর জলাতঙ্ক দিবসে সবাইকে সচেতন হতে এবং প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উৎসাহিত করা হচ্ছে।