বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিতে কোনো অসংগতি পাওয়া গেলে তা পুনরায় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
সম্প্রতি রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চুক্তিতে দুর্নীতি বা ঘুষের মতো গুরুতর অনিয়ম প্রমাণিত হলে তা বাতিল করা হবে। বর্তমানে হাইকোর্টের নির্দেশে চুক্তিটি পুনর্মূল্যায়ন করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের আমলে আদানি গ্রুপের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের এই চুক্তি অনুসারে আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। তবে, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়লার মূল্য বেশি দেখানোর অভিযোগ নিয়ে বর্তমানে আদালতে শুনানি চলছে।
এক আইনজীবীর আবেদনে বলা হয়, আদানি গ্রুপ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে গিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ১৪ টাকা ২ পয়সা দামে কিনেছে, যা ভারতের অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর তুলনায় অত্যধিক। ফলে বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ খাতে বছরে প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে বাধ্য হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, বিদ্যুতের খরচ কমানোর বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকার। তিনি বলেন, "আমরা চাই বিদ্যুতের দাম দেশের গড় খুচরা দামের নিচে নামুক। আদানি গ্রুপের পাশাপাশি অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদকদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য।"
এদিকে, চলতি বছরে আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে। তবে উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এতে দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় কোনো বড় সমস্যা হয়নি। তিনি বলেন, "আমাদের অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা যথেষ্ট। কেবল গ্যাস সংকটের কারণে কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে।"
চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি বলেন, আদালতের তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। "কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদককে ব্ল্যাকমেইল করতে দেব না," উল্লেখ করেন তিনি।