আদানি পাওয়ারের বিদ্যুৎ সরবরাহ হুমকি: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ কেনা অর্ধেকে নামল

Date: 2024-12-03
news-banner

ভারতীয় কোম্পানি আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বকেয়া পরিশোধ নিয়ে বাংলাদেশের টানাপড়েন ক্রমশ গভীর হচ্ছে। বকেয়া পরিশোধ না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদানি। এমন পরিস্থিতিতে আদানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানি অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। সরকারি কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা রয়টার্স-কে জানান, আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিপুল অঙ্কের বকেয়া নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীতকালীন কম বিদ্যুৎ চাহিদার কারণে আদানি থেকে আমদানি কমানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি সম্প্রতি একটি ঘুষ প্রকল্পে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন, যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বাংলাদেশে বকেয়া বিলের কারণে ৩১ অক্টোবর থেকে আদানি সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে।

বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম জানান, "তারা আমাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা হতবাক ও ক্ষুব্ধ। শীতের কম চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা তাদের সরবরাহ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"

আদানির সঙ্গে ২০১৭ সালে ২৫ বছরের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার অধীনে ঝাড়খণ্ডের ২ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। দুটি ইউনিটের মধ্যে প্রতিটির উৎপাদন সক্ষমতা ৮০০ মেগাওয়াট।

নভেম্বর মাসে আদানি প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪১.৮২ শতাংশে নেমে এসেছে, যা এ বছরের সর্বনিম্ন। ১ নভেম্বর থেকে প্ল্যান্টটির একটি ইউনিট পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, গত শীতে আদানি থেকে প্রতি মাসে এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনা হয়েছিল। তবে চলতি শীতে কবে আমদানি স্বাভাবিক হবে, সে বিষয়ে আদানি পরিষ্কার উত্তর পায়নি।

আদানি পাওয়ারের একজন মুখপাত্র বলেন, "বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে, তবে বকেয়া বৃদ্ধি আমাদের জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগ। এটি প্ল্যান্টের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে।"

বিপিডিবি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, আদানির কাছে বাংলাদেশের প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে। গত মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার এবং অক্টোবর মাসে ৯৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি অর্থ দ্রুত পরিশোধের বিষয়ে আদানিকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

এই সংকট দ্রুত সমাধানে উভয় পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

Leave Your Comments